ফেসবুকে আরিফ ভাইয়ের স্ট্যাটাস দেখে আমারও কিছু প্রতারণার অভিজ্ঞতা মনে পড়ে গেল…
আমার গুলো অবশ্য আমেরিকাতে। বুঝতে পারছি না কারা আগে আবিষ্কার করেছে এই কৌশলগুলো?
১) ১৯৯৭ এর কথা বেশিদিন হয়নি আমেরিকাতে এসেছি। মানহাত্তানের সহ (SOHO @ Manhattan) তে একটা স্টোরে ক্যাশিয়ারের কাজ করি। লাঞ্চের সময় স্টোরের আশেপাশে ঘুরাঘুরি করছিলাম হঠাৎ এক লোক সামনে এসে বলল তার হেল্প দরকার – উয়ালেট হারিয়ে গেছে বাড়িতে যাওয়ার জন্য ট্রেন / বাস এর টিকিট কিনতে তার কিছু ডলার লাগবে। যত বেশি দিতে পারি সমস্যা নেই কারন উনি বাড়ি গিয়েই আমার ডলার মেইল করে দিবেন। চেহারা এবং পোশাক দেখে ভদ্রই মনে হল তারপর ইন্ডিয়ানদের মত দেখতে তাই একটু মায়া লাগল – হাতে আবার একটা ব্রিফকেসও আছে। সঙ্গে ৬/৭ ডলারের মত ছিল দিলাম এবং দোকানের ঠিকানা লিখে দিয়ে এলাম। দোকানে এসে বাঙালী ম্যানেজারকে ঘটনা বললাম উনি হাসতে শুরু করলেন – “তোমাকে বোকা বানাইছে, জীবনেও ওই টাকা আর পাবা না। ভাগ্য ভাল তেমন বেশি নিতে পারেনাই”। উনার কথাই সত্যি হয়েছিল। FYI – ইন্ডিয়ান, গায়ানিজ, কিছু সাউথ আফ্রিকান এবং কিছু ক্যারিবিয়ান দ্বীপের লোকদের দেখতে আমাদের মতই মনে হয় তাই ওই প্রতারকটা কোন দেশের ছিল জানিনা।
২) দ্বিতীয় ঘটনা ২০০৩ সালের এতদিনে আমি ব্যাচলর করে এফএএ (Federal Aviation Administration – FAA) তে সামার ইন্টার্ন হিসাবে কাজ করছি। আমাদের অফিসটা হোয়াইট হাউজের কাছাকাছি (1500 K Street)। লাঞ্চে প্রায়ই হোয়াইট হাউজের সামনের পার্কে ঘুরাঘুরি করি। একদিন ওখান থেকে ফেরার পথে আর এক লোক (ইন্ডিয়ানদের মত দেখতে) একই কাহিনী শুনাল। আশ্চর্যজনকভাবে এদের কাছে কাগজ কলম রেডি থাকে ঠিকানা লেখার জন্য – বাড়ি গিয়েই ডলার মেইল করে দিবে। পূর্ব অভিজ্ঞতার কারনে বললাম আমার কাছে কোন ক্যাশ নেই তবে আমার কলিগদের কারও কাছে থাকতেও পারে। ভাবছিলাম এতেই চলে যাবে কিন্তু লোকটা পেছন পেছন আসতে লাগলো। অফিস বিল্ডিং এর কাছাকাছি আসার পর বললাম ওদের কেউ যে ডলার দিবেই এর কোন গ্যারান্টি নেই – এবার লোকটা থামল। একবার মনে হয়েছিল পুলিশে দেই কিন্তু শিউর ছিলাম না, তাছাড়া প্রমান কি সে যে প্রতারক।
৩) এই ঘটনা ঘটেছিল কুইন্স এর জ্যাকসন হাইটস্ এ (মনে নেই কোন সালে) – রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম একটা ভ্যানের কাছাকাছি আসতে স্প্যানিশ এক মহিলা বাচ্চা কোলে নিয়ে কাছে এসে বলছে তাদের গাড়ির তেল শেষ হয়ে গেছে বাড়িতে যেতে পারছে না তাই গাড়ির তেল কিনার মতো কিছু ডলার দিয়ে হেল্প করেন। মোটামুটি অভিজ্ঞতার কারনে বললাম সরি আমার কাছে কোন ক্যাশ নেই। পরে ওদের করুন মুখ মনে করে খারাপই লাগল বিশেষ করে বাচ্চাটার কথা মনে করে। পরে জেনেছিলাম এটাও টাকা উপার্জনের নতুন কৌশল। আমার ছোট ভাইয়ের মন আমার চেয়ে একটু বেশী নরম এবং অমন কাহিনী শুনে সে বেশকিছু ডলার দিয়েছিল আর পরে জেনেছিল যে সে প্রতারিত হয়েছিল।
-এই কৌশলগুলোর ক্রেডিট কে নিবে আমারিকা, বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া, না স্প্যানিশ কোন দেশ?
0 Comments